Digital Marketing

আমরা কিভাবে মার্কেটিং করি

Planning
Progress 100%
Funneling
Progress 100%
Targeting
Progress 100%
A/B Test
Progress 100%
Retarget
Progress 100%

কোনো পণ্যের প্রচারের কাজ করার সময় সর্বপ্রথম প্ল্যানিং করি। পণ্য বা সেবাটির ব্যবহারকারী কারা? ক্রেতা কারা? পণ্য বা সেবাটি মানুষের কোন সমস্যার সমাধান করবে? মূল্য কত হওয়া উচিত? পণ্য বা সেবাটির ব্যবহারকারীরা কোন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বেশি সময় ব্যয় করে। তাদের আগ্রহ ও আচরণ কেমন? কোন বিষয়ে তারা কিভাবে কিভাবে এক্ট বা রিএক্ট করে। পণ্যের সাপ্লাই চেইন, প্যাকেজিং, পরিবহন, ডেলিভারি ইত্যাদি বিষয়ও পরিকল্পনায় থাকে।

প্ল্যানিং শেষে আমরা পণ্য বা সেবাটির ফানেল তৈরী করি, একে সেলস ফানেল বলে। সেলস ফানেল-এ পণ্য বা সেবাটির প্রচারণার শুরু থেকে বিক্রয় পর্যন্ত কি কি কৌশল ও ধাপ অনুসরন করতে হবে তার পরিকল্পনা করা হয়। যারা কিনবে তাদের ডাটা পরবর্তীতে কিভাবে কাজে লাগাতে হয়, যারা কিনবে না তাদেরকে পুনরায় কিভাবে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে কেনার জন্য উৎসাহ, চাপ দিতে হবে বা লোভ দেখাতে হবে সেই ধাপসমূহ পূর্বেই পরিকল্পনা করা থাকে ফানেল তৈরীর সময়।

কোনো পণ্যের প্রচারণায় টার্গেট বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণা সঠিক গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন সঠিকভাবে টার্গেটিং করা। বাচ্চার ডায়াপার বা খেলনার বিজ্ঞাপন যাদের বাচ্চা নেই তাদেরকে দেখানো সময় ও অর্থ নষ্ট ছাড়া কিছুই নয়। আবার ভবনের রঙ করার কাজ করি এমন বিজ্ঞাপন বিল্ডিং এর মালিক ছাড়া অন্য কাউকে দেখিয়েও লাভ নেই। তাই যেকোনো পণ্যের প্রচারণায় টার্গেট করি সতর্ক ভাবে।

কোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণায় লাখ টাকা খরচ করার পর যদি নজরে আসে প্রচারণা ভালো কাজ করছে না ততক্ষণে কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেলো। তাই কোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণায় আমরা প্রথমে কয়েকটি টেস্ট অ্যাড রান করি। সেই অ্যাড গুলোর ফলাফল বিশ্লেষণ করে আমরা একটা সামারি তৈরী করি কোনো অ্যাডগুলো ভালো কাজ করবে এবং খরচ কমাবে। তারপর আমরা সেই উইনিং অ্যাড বড় পরিসরে চালাই এবং প্রতিদিন অ্যাডের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করি।

একটি ফ্রিজ কেনার কথা ভেবে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভিজিট করলেন কিন্তু কিছু একটা ভেবে অথবা প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি না মিলায় আপনি ফ্রিজটি কিনলেন না। কেমন হবে যদি পরদিন দেখেন সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি ফ্রিজের বিজ্ঞাপন দেখছেন, ডিস্কাউন্ট পাচ্ছেন! হ্যাঁ, অনেকেই থাকে প্রথমবারেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, অনেকে আবার চেক-আউট পেইজ থেকে ফিরে আসে, তাদেরকে যদি পুনরায় টার্গেট করে অ্যাড দেখানো যায় সেল অনেক বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।  

আমরা কেন সেরা?

বাংলাদেশের মার্কেটিং আবহাওয়ায় ২০১৬-১৭ সাল থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে জড়িত আছি। অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটিং করা তুলনামূলকভাবে জটিল। বাংলাদেশের এজেন্সিগুলো বুস্টিং নামে একটি মার্কেটিং আইডিয়া দাঁড়া করিয়েছে। এই দলে ৯৮% মার্কেটার যুক্ত হয়ে প্রকৃত মার্কেটিংকে কঠিন করে তুলেছে। তবে আশার কথা হচ্ছে পরিবেশ ধীরে ধীরে কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে। একটু দেরিতে হলেও অনেকেই এখন বুঝতে শুরু করেছে বুস্টিং নামক মার্কেটিং সময় ও অর্থ অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। 

বাংলাদেশে যেকোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণা সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া যথেষ্ট জটিল একটি কাজ। যখন কেউ মার্কেটিং এর ভেতরে প্রবেশ করে তখন বুঝতে শুরু করে এতো ফেইক একাউন্ট, এতো শো-অফ করা ও মিথ্যা তথ্যে প্রোফাইল সাজানো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে থেকে সঠিক ও কার্যকর ক্রেতা বা অডিয়েন্স বের করে আনা যথেষ্ট কঠিন।

উপরোক্ত সমস্যাগুলো নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করার ফলে আমরা অত্যন্ত কার্যকরী কিছু কৌশল তৈরি করেছি, যেসব প্রয়োগ করে আমরা সঠিক মানুষের কাছে কম খরচে দ্রুততার সাথে যেকোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণা পৌঁছে  দিতে পারি।

কোনো প্রতিষ্ঠানের ডিজিটালাইজেশন করা অথবা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মার্কেটিং করার দায়িত্ব নিলে কোম্পানির পক্ষ থেকে আমাদেরকে কোনো নির্দেশনা বা তাড়া দিতে হয় না। আমরা নিজ দায়িত্বে কোম্পানির গ্রোথ বাড়াতে সব ধরনের পরিকল্পনা করে থাকি এবং কোম্পানির কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে আমরা ধাপে ধাপে সেই সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে থাকি।

মার্কেটিং এজেন্সিকে মার্কেটিং এর দায়িত্ব দিয়েছেন এবং সঠিক ফলাফল না পেয়ে হতাশ হয়েছেন এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম নয়। তাই আমরা বিভিন্ন কোম্পানির সাথে Pay After Sale Grow নামে পারফরমেন্স ভিত্তিক পারিশ্রমিকের চুক্তি করে কাজ করছি। পারফরমেন্স ভিত্তিক পারিশ্রমিক বিষয়টা হলো আমরা যদি কোম্পানির সেল বা আয় বা গ্রোথ পূর্বের তুলনায় বাড়াতে পারি তাহলেই কেবল আমরা পারিশ্রমিক নিবো। অন্যথায় মার্কেটিং এর কাজ ফ্রিতে করে দিবো।

ডিজিটাল মার্কেটিং প্রয়োজন কেন?

প্রযুক্তির উন্নয়ন ও প্রযুক্তিতে নতুন নতুন সুবিধা যুক্ত হওয়ার সাথে সাথে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গুলোতে মানুষের উপস্থিতি দিন দিন বাড়ছে। ডিজিটাল ডিভাইস বর্তমানে আমাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী। তাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গুলোতে ব্যবসায়ীদের ডিজিটাল কার্যক্রম ও বিজ্ঞাপন দেয়ার প্রবণতাও দিন দিন বাড়ছে। বর্তমান সময়ে একটি ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচারণা ছাড়া ব্যবসার প্রসার চিন্তাই করা যায় না। তাই ওয়েবসাইটে SEO বা SEM করা বলেন আর সোশ্যাল মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন দেয়া বলেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজন অনস্বীকার্য।

 

বড়-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি গুলো তাদের পণ্য প্রচারণায় অনলাইনকে ব্যবহার করছে। এছাড়া অন্যান্য মার্কেটিং মেথড এর চেয়ে ডিজিটাল মেথড গুলো অনেক বেশি ফলাফল দেয়। তাই, বেশিরভাগ প্রচারণা এখন অনলাইন মাধ্যমেই হচ্ছে। অন্যদিকে ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং পেশা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

ব্যবসায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রভাব

আপনি বাচ্চার ডায়াপার বিক্রি করতে চান। ডায়াপার ব্যবহার করবে বাচ্চারা কিন্তু কিনবে বাচ্চার বাবা-মা। কোন বাবা-মায়ের বাচ্চা আছে এবং কারা ডায়াপার কিনে তার সকল তথ্য যদি আপনার কাছে থাকতো বা সংগ্রহ করার উপায় জানা থাকতো তাহলে কতই না ভালো হতো,তাই না? কম কষ্টে অনেক বেশি বিক্রি করা যেতো।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কারা বিসিএস দিতে চায় সেই তথ্য যেহেতু  বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষের কাছে থাকবে না আর থাকলেও আপনাকে দিবে না বা আপনিও প্রত্যেকের সাথে আলাদা ভাবে যোগাযোগ করে বিসিএস পরিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করতে পারবেন না তাই এমন কোনো উপায় যদি থাকতো আপনি বাসায় বা অফিসে বসেই বের করে ফেলতে পারতেন কারা বিসিএস দিবে তাহলে তাদেরকে বিসিএস কোচিংয়ের জন্য অফার করতে পারতেন বা তাদের কাছে বিসিএস এর বইপত্র বিক্রি করতে পারতেন।

এমন হাজারো কেইস ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তাদের সামনে আসে। যেসকল ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তারা এই সকল সমস্যা সহজেই সমাধান করে ফেলতে পারে তাদের গ্রোথ অল্প সময়েই আকাশচুম্বী হয়। আপনি হয়ত ভাবতে পারেন এই সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া অনেক জটিল ও সময় সাপেক্ষ আবার খরচও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে কোনোটাই সম্পূর্ন সত্য না। প্রযুক্তির যুগে যেকোনো পণ্য বা সেবার প্রচার অল্প সময়ে, পূর্বের চেয়ে কম খরচেই সঠিক মানুষের কাছে  দ্রুততার সাথে পৌঁছে দেয়া সম্ভব।

আপনি ঠিকই শুনছেন। আসলেই সম্ভব! 

যেসকল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অতি সহজে অল্প সময়ে খুব কম খরচে আপনি আপনার পণ্য ও সেবার তথ্য সঠিক ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন তার মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যতম। দিন দিন এই প্ল্যাটফর্মের পরিসর বড়ই হচ্ছে। তাই কোনো উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীর এই প্ল্যাটফর্মকে এড়িয়ে চলার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। যত দেরি করে শুরু করবেন তত আপনি আপনার ভালো অবস্থান অর্জনকে কঠিন করে তুলবেন।

আশা করি বুঝতেই পারছেন আপনি একজন উদ্যোক্তা হোন বা ব্যবসায়ী হোন বা চাকরি প্রার্থী হোন বা প্রযুক্তি লাভার হোন আপনার উচিৎ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে ফেলা অথবা ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি দিয়ে মার্কেটিং করানো।

মার্কেটিং কি?

আমরা বইতে পড়েছি ‘Marketing’ শব্দের অর্থ হল বিপণন করা, প্রচার করা। সাধারণত কোন কিছু প্রচার করাই হল মার্কেটিং।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মার্কেটিং হলো কিছু কৌশল বা পদক্ষেপ যা পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের আগ্রহ তৈরি করে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

ডিজিটাল ডিভাইস এবং প্রযুক্তি (মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট ইত্যাদি) ব্যবহার করে কোন পণ্য বা সার্ভিসের প্রচারণা করাই হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। যেটাকে অনলাইন প্রচারণাও বলা হয়।

অনলাইন প্রচারণা কেন গুরুত্বপূর্ণ

একসময় ছিল যখন বাজারে নতুন কোন পণ্য আসলে তাদের কিছু কর্মী ঘরে ঘরে গিয়ে সেই পণ্য সম্পর্কে সবাইকে জানিয়ে দিত এবং তাদেরকে কেনার জন্য আকৃষ্ট করত। বর্তমানে সেই প্রচারণা গুলো অনলাইনে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব সহজেই করা যাচ্ছে। গ্রাহকের কাছে পণ্যের গুণাগুণ, প্রয়োজনীয়তা সবকিছুই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যাচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে।

বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১১ কোটি ২৭ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। বাংলাদেশের মানুষ সব চেয়ে বেশি যেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেই তালিকায় গুগল, ইউটিউব এর পরেই তৃতীয় স্থানে আছে ফেসবুক। 

বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ৪.৫৭ বিলিয়ন বা ৪৫৭ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে প্রায় ২.৮৫ বিলিয়ন বা ২৮৫ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। আপনি ঘরে বা নিজের অফিসে বসে ফেসবুকের মাধ্যমে ২৮৫ কোটি মানুষের কাছে আপনার পণ্য বা সেবার তথ্য সহজেই পৌছে দিতে পারছেন।

এবার আপনি একবার ভেবে দেখুন আপনার ব্যবসার বা পণ্যের মার্কেটিং টা যদি অনলাইনে করেন তাহলে কি পরিমান কাস্টমার আপনি পেতে পারেন। এজন্য প্রতিটা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অনলাইন প্রচারণা গুরুত্বপূর্ণ।

আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিন্মে আলোচনা করা হলোঃ

১. ভোক্তারা বেশি বেশি ডিজিটাল হচ্ছেঃ

সময় এবং প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রতিটি পণ্যের ভোক্তার মাঝে অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। ভোক্তারা এখন কোন পণ্য কেনার আগে দেখতে চায় সেই পন্যটি কেমন? কি কি গুনাবলী রয়েছে? ভোক্তা সেই পণ্য গ্রহন করলে কি কি সুবিধা পাবে? অন্য আর কে এমন ধরণের সেবা প্রদান করে? তাদের সাথে এই পণ্যের পার্থক্য কি? তার পরিচিত কেউ একই পণ্য ব্যবহার করছে কিনা বা সাধারণ জনগন এই পণ্য ব্যবহার করে কি রিভিউ দিচ্ছে ইত্যাদি, এই বিষয়গুলো জানার জন্য ভোক্তা সহজেই ব্যবহার করে তার হাতের মোবাইলটি বা কম্পিউটারটি। আগে একটা সময় ছিল, এই প্রশ্নগুলো ভোক্তা জানতে চাইলেও কম সময়ে সহজেই জানতে পারতেন না কিন্তু এখন গুগল বা ফেসবুক-এ সার্চ দেওয়ার মাধ্যমে দেখতে সহজেই পণ্যের ছবি, পণ্যের বৈশিষ্ট্য এবং পণ্য কোন কোম্পানী সরবরাহ করছে, ভোক্তা মতামত এবং আর অনেক উত্তর খুব সহজেই দেখতে পায় এবং যে সব পণ্য এর তথ্য সহজেই পেয়ে যায় এবং পজিটিভ রিভিউ দেখে সে সব পণ্য কিনতে সব চেয়ে বেশি আগ্রহী হয়। যেহেতু ভোক্তা পণ্য ক্রয় করার পূর্বে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করছে তাই আপনাকেও ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করেই তার কাছে পৌছাতে হবে। আপনাকে ব্রান্ড এবং আপনার পণ্যকে গুগল, ফেসবুক, টুইটার বা ইউটিউবের মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। যেন তারা আপনার ব্রান্ড বা পণ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে সহজেই খুজে পায়। তাহলে আপানর পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধি পাবে। আপনার ব্যবসায়ের উন্নয়ন হবে। ২০১৮ সালে ভোক্তারা রিভিউ এর দিকে আরো বেশি নজর দিবে, তাই এ বিষয়ের দিকে ভাবা জরুরী।

২. অল্প খরছে ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রেটেজির প্রয়োগ করা যায়ঃ

প্রচলিত মার্কেটিং পদ্ধতির সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় পার্থক্য হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব কম খরচে আপনি আপনার ব্যবসায়কে কাঙ্ক্ষিত কাস্টমারের কাছে পৌছাতে পারবেন। একটি ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে বা একটি ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে আপনার পণ্যকে লক্ষাধিক কাস্টমারের কাছে খুব সহজে পৌছাতে পারবেন যা প্রচলিত লোকাল মার্কেটিং পদ্ধিতে অনেক ব্যয়বহুল। ফেসবুক অ্যাডের মাধ্যমে কয়েক ডলার খরচ করে আমাদের দেশে হাজার মানুষের কাছে পণ্য সম্পর্কিত তথ্য পৌছে দিচ্ছে বিভিন্ন ই-কমার্স কোম্পানী। তাও আবার বয়স, পেশা, ইন্টারেস্ট ইত্যাদির মাধ্যমে টার্গেট করে সঠিক ব্যক্তির কাছে পৌছানো যাচ্ছে। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই সুযোগ লুফে নিচ্ছে পৃথিবীর সকল ছোট বড় কোম্পানী গুলো। আপনি কেন আপনাকে গুটিয়ে রাখবেন।

৩. সহজেই ট্র্যাক করা যায়ঃ

মার্কেটিং করার সাথে সাথে মার্কেটিং এর রেজাল্ট ট্র্যাক করতে হয়। মার্কেটিং এর পদক্ষেপ কেমন হল? কতটুকু সফলতা পাওয়া গেল? পণ্য বা সার্ভিস কাস্টমারের কেমন লাগল? ইত্যাদি জানতে পারবেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর ট্র্যাকিং সিস্টেম এর মাধ্যমে। আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ন অংশ এসইও করেন তাহলে সহজেই ভিজিটর পাবেন এবং সেই ভিজিটরকে গুগল এনালাইটিকের মাধ্যমে ট্র্যাক করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার এসইও পদ্ধতিটি কত জন মানুষকে আপনার কাছে নিয়ে আসতে পেরেছে তা জানতে পারবেন এবং তার ফলাফল কি তা বুঝতে পারবেন।

তারপর মার্কেটিং এ কি পরিবর্তন দরকার? কি নতুন যোগ করা দকার তা বুঝতে পারবেন। কিন্তু প্রচলিত মার্কেটিং পদ্ধতির মাধ্যমে কতজন আপনার সম্পর্কে জানতে পারলো তা বুঝতে পারা যায় না। যেমনঃ আপনি আপনার ব্যবসায়ের মার্কেটিং বিভিন্ন ব্যানার বা পোস্টার এর মাধ্যমে করলেন কিন্তু বলতে পারবেন না এই পোস্টার বা ব্যানার কত জন দেখল এবং কত জন আপনার সম্পর্কে জানলো। অথচ ডিজিটাল মার্কেটিং-এ প্রায় প্রতিটি দিক ট্র্যাক করা যায়। যদি আপনার মার্কেটিং স্ট্রেটেজিতে কোনরকম ভালো ফলাফল না আসে তাহলে সেই স্ট্রেটেজি খুব সহজেই পরিবর্তন করে ফেলতে পারবেন। এটি মার্কেটিং ব্যয়ও কমাবে।

৪. ট্রেন্ড গুলো সহজেই সনাক্ত করা যায়ঃ

মার্কেটিং এর জন্য ট্রেন্ড সবসময় গুরুত্বপূর্ন। ট্রেন্ড মার্কেটিং পদ্ধতিকে পরিবর্তন করে। কারণ মার্কেটিং সবসময় ট্রেন্ড অনুসারে হতে হয়। আবার ট্রেন্ডও সর্বদা পরিবর্তনশীল। তাই একজন মার্কেটারকে সর্বদা ট্রেন্ডের প্রতি লক্ষ রাখতে হয়। ট্রেন্ড সনাক্ত বা ট্রেন্ড অনুসরন করার সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম হল ডিজিটাল মাধ্যম। ডিজিটাল মার্কেটিং–এ সকল ট্রেন্ড সহজেই জানা যায় ও বুঝা যায়। গুগল ট্রেন্ডে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে কোন ধরণের ট্রেন্ড গুলো চলছে তা দেখা যায়। মার্কেটিং পদ্ধতি তৈরির পূর্বে সেই ট্রেন্ড অনুসারে কৌশল তৈরি করা যায়।

৫. কাস্টমারের সাথে সম্পর্ক তৈরি করা অনেক সহজঃ

আমারা জানি কাস্টমারের সাথে সম্পর্ক তৈরি করা একটি ব্যবসায়ের জন্য কতটা গুরুল্বপূর্ন। এই সম্পর্ক সহজেই তৈরি করা যায় ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে। ডিজিটাল মার্কেটিং করা হয় ওয়েবসাইট, ব্লগ, ফেসবুক পেইজ, ইউটিউব ভিডিও ইত্যাদির মাধ্যমে যেখানে সরাসরি কাস্টমার তাদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে। যার মাধ্যমে তাদের সাথে সহজে সম্পর্ক তৈরি হয়। তাদের পছন্দ অপছন্দ সম্পর্কে জানা যায় এবং তার উপর নির্ভর করে উদ্যোগ নেয়া যায় সহজেই। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এই দিক দিয়ে প্রচলিত মার্কেটিং পদ্ধতি থেকে কার্যকরী।

৬. প্রতিযোগী ব্যবসায়ীঃ

আপনি কেন ডিজিটাল মার্কেটিং করবেন এর সবচেয়ে সহজ উত্তর হল আপনার প্রতিযোগী ব্যবসায়ী ডিজিটাল মার্কেটিং করছে। আমাদের দেশে হোক বা আন্তর্জাতিক, ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োগ দেখতে পারবেন সকল ক্ষেত্রে। আজ আমাদের দেশের খুব ছোট একজন ব্যবসায়ী তার পণ্য ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে প্রচার করছে। লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে কাস্টমারকে পণ্য দেখাচ্ছে। ঠিক তেমনি বড় বড় কোম্পানীগুলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে, ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্রাটেজিস্ট এর পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করছে। আপনি কেন করবেন না? আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং না করেন তাহলে কাস্টমারের একটি বড় অংশ আপনা পণ্য এবং ব্রান্ড সম্পর্কে জানতে পারবেন না। তখন এই সুযোগটি আপনার প্রতিযোগী গ্রহন করে নিবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং করার উপায়সমূহ

ডিজিটাল পদ্ধতিতে মার্কেটিং করার অনেক মেথড আছে। আপনার ব্যবসায়ের জন্য কোন মেথডটা বেশি কার্যকর, আপনার পণ্যটি কোন মেথডে সহজে গ্রাহকের কাছে পৌছাতে পারবেন তা আপনাকে খুজে বের করতে হবে। 

সেরা কয়েকটি মেথড

  • Search Engine Optimization

  • Search Engine Marketing

  • Social Media Marketing

  • Affiliate Marketing

  • Content Marketing

  • Email Marketing

  • Display Advertising

  • Viral Marketing

Search Engine Optimization

Search Engine Optimization এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল SEO.

গুগল, ইয়াহু, বিং এর মত সার্চ ইজ্ঞিন গুলোতে নিজের ওয়েবসাইটকে বা নিজের প্রোডাক্ট বা সার্বিস গুলোকে সবার উপরে নিয়ে আসাটাই হল SEO এর কাজ। বর্তমানে প্রত্যেকেই ব্রাউজার ব্যবহার করে এবং কোনো একটা প্রোডাক্ট নেওয়ার আগে গুগল সার্চ করে ঐ প্রোডাক্টটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়। তারপর প্রোডাক্টটি ভাল লাগলে সে অর্ডার দেয়।

এখন আপনার সাইটটি যদি সার্চইঞ্জিন-এ প্রথমে বা ১ম পেইজে না থাকে তাহলে আপনি ভিজিটর কম পাবেন । আর ভিজিটর কম মানে আপনার বিক্রিও কম বা নেই। এজন্য আপনার ওয়েবসাইট বা প্রোডাক্ট পেইজ গুলোকে SEO করা প্রয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এই সেক্টর এর ভ্যালু মার্কেটে সবচেয়ে বেশি।

Search Engine Marketing

Search Engine Marketing এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল SEM. যাকে পেইড SEO মার্কেটিং ও বলা হয়।

নিজেদের ওয়েবসাইট বা প্রোডাক্ট পেইজ গুলোকে টাকা ব্যয় করে সার্চ ইঞ্জিন-এ সবার সামনে  নিয়ে আসার জন্য এই মার্কেটিং করা হয়। আমরা যখন গুগলে সার্চ করি তখন অর্গানিক রেজাল্ট এর উপরে কয়েকটা রেজাল্ট থাকে যা পেইড রেজাল্ট। যেগুলোতে অ্যাড লেখা থাকে। এই কাজটি সঠিকভাবে করতে একজন মার্কেটার এর প্রয়োজন হয়। অন্যথায় সঠিকভাবে করতে না পারলে আপনার টাকা এবং শ্রম দুইটাই ব্যর্থ।

Social Media Marketing

Social Media Merketing কে সংক্ষেপে SMM বলা হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, পিন্টারেস্ট) ব্যবহার করে যে মার্কেটিং করা হয় তা হল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।

বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বে ৪৩৩ কোটির বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী রয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়া গুলো ব্যবহার করছে। এই ব্যাপক পরিমাণ ব্যবহারকারীর কাছে যদি আপনি সঠিকভাবে আপনার পণ্যের প্রচারণা করতে পারেন তাহলে আপনার কাস্টমার এর অভাব হবে না।

এছাড়া অনেক কোম্পানি সোশ্যাল মিডিয়াকে তাদের প্রচারণার প্রধান মাধ্যম হিসেবে নিয়েছে। শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই নতুন একটি ব্যবসা চালু করা সম্ভব এবং অনেকেই করছে। এজন্য মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

Affiliate Marketing

বড় বড় কোম্পানি গুলো তাদের ব্যবসায়ের বিক্রি বৃদ্ধির জন্য তারা অ্যাফিলিয়েট সিস্টেম চালু করে রাখে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল নিজেদের পণ্য গুলো অন্যের মাধ্যমে বিক্রি করা। অর্থাৎ আপনি ঐ কোম্পানির তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে দ্বিতীয় ব্যক্তির কাছে তাদের পন্য বিক্রি করা। বিক্রয়টি আপনার মাধ্যমে হওয়ায় আপনি নির্দিষ্ট পরিমানে কমিশন পাবেন। এতে কোম্পানি এবং তৃতীয় ব্যক্তি দুজনেই লাভবান হয়। বর্তমানে প্রত্যেকটা কোম্পানিই তাদের ব্যবসায়ে অ্যাফিলিয়েট সিস্টেম রাখে। একটা ব্যবসায়ের ব্র্যান্ড তৈরির ক্ষেত্রে, পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অ্যাফিলিয়েট সিস্টেমটা অনেক বেশি কার্যকর। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অ্যাফিলিয়েট কোম্পানি হচ্ছে আমাজন। আমাজন এর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেও যে কেউ ভালো কমিশন অর্জন করতে পারে।

Content Marketing

মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল কনটেন্ট। কনটেন্ট যেকোনো কিছু হতে পারে, যেমন: ছবি, অডিও, ভিডিও, টেক্সট ইত্যাদি। আপনি যখন প্রচারণা করবেন তখন আপনি যদি কনটেন্ট গুলো সঠিকভাবে, সঠিক জায়গায়, সঠিক সময়ে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার ফলাফলও অনেক ভালো পাবেন। সুতরাং, আপনার পণ্যের প্রচারণার ক্ষেত্রে আপনার কনটেন্ট কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।

Email Marketing

ইমেইল এর মাধ্যমে নিজেদের পন্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের জানিয়ে দেওয়ায় হল ইমেইল মার্কেটিং।

ডিজিটাল প্রযুক্তির এই সময়ে প্রত্যেকের এক বা একাধিক ইমেইল এড্রেস থাকে এবং সবাই প্রতিদিন কম-বেশি তাদের ইমেইল চেক করে। আপনি যদি আপনার পণ্য বা সেবার কোনো তথ্য বা অফার টার্গেট ক্লায়েন্টদেরকে ইমেইলে পাঠান এতে আপনার পাঠানো ইমেইলটি চেক করে তারা নতুন পণ্য সম্পর্কে বা বিভিন্ন অফার সম্পর্কে জানতে পারবে। আপনার গ্রাহকদেরকে ইমেইল মার্কেটিং করতে বিভিন্ন ফর্ম ফিল-আপ বক্স এর মাধ্যমে তাদের ইমেইর গুলো সংগ্রহ করে নিতে পারেন।

Display Advertising

প্রচারণার মাধ্যম গুলোর মধ্যে এটিও একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের পণ্যের বা সার্ভিসের অ্যাড দেখত পাই, তাই হলো ডিসপ্লে এ্যাডভারটাইজিং।

প্রতিনিয়ত প্রত্যেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এতে আপনার প্রচার করা অ্যাড গুলোর মাধ্যমে তারা আপনার কোম্পানি, সেবা বা পণ্য সম্পর্কে জানতে পারবে।

Viral Marketing

এই মাধ্যমটি অন্যসব মাধ্যম গুলো থেকে আলাদা এবং সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। ভাইরাল মার্কেটিং এমন একটা পদ্ধতি যার ফলে মুহুর্তের মধ্যেই আপনার প্রচার করা বস্তুটি সবার কাছে পৌছে যাবে। এই ধরনের প্রচারণা গুলো বাতাসের সাথে সাথে সবার কাছে গিয়ে পৌছায়। এগুলো সাধারনত গ্রাহকের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। এই মার্কেটিংকে কেউ কেউ ওয়ার্ড অব মাউথ বলে থাকে, যদিও কিছুটা ভিন্নতা আছে। এই মাধ্যমে মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে সবার থেকে আলাদা ভাবে কৌশল করতে হবে। এমন কিছু করতে হবে যাতে সবাই সেটা নিয়ে একজন অন্যজনের সাথে নিজ উদ্যোগে শেয়ার করে। আর এটাই হল ভাইরাল মার্কেটিং।

উপরের বর্ণিত সবগুলো মেথড ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া আরো কিছু মেথড আছে যেগুলো তেমন একটা কার্যকর নয়।

error: Content is protected !!

We love writing great content and sharing industry insights. To get a copy of our research on latest trends , subscribe to our newsletter